হাফিজ ‘বোঝা’ ঝেড়ে ফেলার ইঙ্গিত পাকিস্তানের

0
hafiz-saeed

আন্তর্জাতিক চাপের মুখে জঙ্গি নেতা হাফিজ সাইদ এবং তার সংগঠন লস্কর ই তইবা-কে অবশেষে ঝেড়ে ফেলতে সক্রিয় হওয়ার ইঙ্গিত দিল পাকিস্তান। যার প্রথম ধাপ হিসেবে একদিকে যেমন হাফিজ ও লস্করকে পাকিস্তানের ‘বোঝা’ এবং দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার ‘বিপদ’ বলে ব্যাখ্যা করলেন পাক বিদেশমন্ত্রী, তেমনই পাকিস্তান সরকার হাফিজের গৃহবন্দি থাকার মেয়াদ বাড়ানোর নির্দেশ জারি করল।

নিউ ইয়র্কের এশিয়া সোসাইটিতে গতকাল বুধবার এক প্রশ্নোত্তর পর্বে পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী খোয়াজা আসিফ সরাসরিই বলেন, ‘‘আমি মেনে নিচ্ছি, সইদ-লস্কর আমাদের বোঝা। আমি এটা অস্বীকার করছি না। কিন্তু ওদের ঝেড়ে ফেলার জন্য আমাদের কিছুটা সময় দিন। এই সব ঝামেলা মোকাবিলার জন্য উপযুক্ত রসদের অভাব আছে আমাদের। ’’

ওই আলোচনাতেই পাকিস্তানে জঙ্গিদের বাড়বাড়ন্তের জন্য সরাসরি আমেরিকাকেই দায়ী করেছেন আসিফ। তার বক্তব্য, গত শতাব্দীর ৮০-র দশকে আফগানিস্তান থেকে সোভিয়েত ইউনিয়নকে হঠানোর জন্য আমেরিকাই এই জঙ্গিদের তৈরি করেছে। তারপরেও এদের কাজে লাগিয়েই ছায়াযুদ্ধ চালিয়ে গেছে ওয়াশিংটন। আর এদের জন্যই আজ পাকিস্তানকে বারেবারে রক্তাক্ত হতে হচ্ছে।

সরাসরি আমেরিকাকে তোপ দেগে আসিফ বলেন, ‘‘সাইদ নিয়ে আমাদের দোষ দেবেন না। এই লোকগুলোই কুড়ি বছর আগে আমাদের প্রিয় ছিল! এরাই হোয়াইট হাইসে দিনের পর দিন খানা-পিনা করে গেছে। এখন আপনারা বলছেন, চুলোয় যাও পাকিস্তান!’’

এখানেই থামেননি পাক বিদেশমন্ত্রী। খোলামেলা ভাবেই তিনি জানিয়েছেন, পাকিস্তানের বর্তমান বিধ্বস্ত অবস্থা দেখে তিনি ‘রক্তাক্ত’। আসিফের বক্তব্য, রাশিয়ার বিরুদ্ধে ওই ছায়াযুদ্ধে আমেরিকার পাশে দাঁড়িয়ে জেহাদকে সমর্থন করেছিল পাকিস্তান। আর সেটা করতে গিয়ে গোটা দেশের সংস্কৃতি বদলে গেছে। এটাকে রাতারাতি বদলে ফেলা কঠিন।

এদিকে হাফিজের গৃহবন্দি থাকার মেয়াদ আরও এক মাস বাড়িয়েছে পাকিস্তান প্রশাসন। তাদের বক্তব্য, হাফিজ বাইরে এলে আইনসৃঙ্খলার গুরুতর অবনতি হতে পারে। সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখেই এমন সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। হাফিজ বাইরে এলেই তার সংগঠন তাকে হিরো বানিয়ে গোটা দেশে অস্থিরতা তৈরির চেষ্টা চালাবে। এজন্য যেমন নানা জায়গা থেকে গাড়ি জোগাড় করা হচ্ছএ, তেমনই অস্ত্রও সংগ্রহ করা হচ্ছে। এতেই বিপদ বলে আশঙ্কা প্রশাসনের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *