পদার্থবিদদের চমকে দিল ১৭ বছরের পাকিস্তানি ছাত্র পদার্থ বিজ্ঞানী

0
মহম্মদ শাহী নিয়াজী

মহম্মদ শাহী নিয়াজী

মাত্র ১৭ বছর বয়েসেই একজন স্বীকৃত বিজ্ঞানীতে পরিণত হয়েছেন পাকিস্তানি তরুণ মুহাম্মদ শাহির নিয়াজি। ‘বৈদ্যুতিক মৌচাক’ নামে পদার্থ বিজ্ঞানের এমন একটি বিষয়ের তিনি ছবি তুলেছেন এবং এর তাপ নিরুপণ করেছেন- যা আগে কেউ পারেনি। খবর বিবিসির।

তার এই গবেষণা সম্প্রতি রয়াল সোসাইটির ওপেন সায়েন্স জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। শাহির নিয়াজি পাকিস্তানের লাহোর শহরের একটি হাই স্কুলের ছাত্র। তার মাথার কোঁকড়া চুল এবং চোখের চশমার জন্য তাকে খুবই বুদ্ধিদীপ্ত একজন লোকের মতই দেখায়।

‘আমি পাকিস্তানের জন্য আরেকটি নোবেল পুরস্কার জিততে চাই’ – বলেন নিয়াজি। তার কথা- ‘আইজাক নিউটনের যখন প্রথম বৈজ্ঞানিক গবেষণাপত্র বেরোয় তখন তার বয়স ছিল ১৭। আর আমি যখন আমার গবেষণাপত্র প্রকাশের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতির চিঠি পাই তখন আমার বয়স ছিল ১৬।’

‘বৈদ্যুতিক মৌচাক’ নামের ব্যাপারটি পদার্থ বিজ্ঞানীরা বেশ কয়েক দশক আগে থেকেই জানতেন। সহজ কথায় ব্যাপারটা হলো: দুটি ইলেকট্রোড – যার একটি চোখা আর আরেকটি সমান – তার মাঝখানে যে বৈদ্যুতিক ক্ষেত্র সেখানে যদি একটা তেলের স্তর স্থাপন করা হয়, তাহলে তার মধ্যে একটা নড়াচড়া তৈরি হয় এবং তেলের স্তরটা একটা মৌচাকের মতো প্যাটার্ন তৈরি করে।

কখনো কখনো এই প্যাটার্ন দেখতে হয় রঙিন কাচের জানালার মতো। বৈদ্যুতিক চার্জবিশিষ্ট অণু বা আয়নের চাপের ফলেই এটা হয়।

নিয়াজী যেটা করেছেন তা হলো- তিনি এই আয়নের নড়াচড়ার ছবি তুলতে পেরেছেন এবং তেলের ওপরের স্তরে যে তাপ সৃষ্টি হয় তা রেকর্ড করতে পেরেছেন। তার আগে কেউ এটা পারেনি।

রাশিয়ায় গত বছর তরুণ পদার্থ বিজ্ঞানীদের এক প্রতিযোগিতায় তিনি এবং অন্য চারজন প্রথম এই প্রক্রিয়াটি দেখান। ওই প্রতিযোগিতায় এটাই ছিল পাকিস্তানের প্রথম দল।

রাশিয়া থেকে ফিরে নিয়াজি সিদ্ধান্ত নেন তিনি তার এই গবেষণা প্রকাশ করবেন। আরো এক বছর কাজের পর তার গবেষণাপত্র রয়াল সোসাইটির ওপেন সায়েন্স জার্নালে প্রকাশের জন্য গৃহীত হয়। তার কয়েকদিন পরই ছিল নিয়াজীর ১৭তম জন্মদিন।

তার এই কাজের তাৎপর্য কি?  

নিয়াজী বলছিলেন, ‘বৈদ্যুতিক মৌচাক থেকে বোঝা যায় যে এই বিশ্বব্রহ্মান্ডের সব কিছুই ভারসাম্য খুঁজছে। এই পরীক্ষায় তেলের স্তর মৌচাকের মতো ষড়ভূজের আকৃতি নিচ্ছে – যা হচ্ছে সবচাইতে স্থিতিশীল কাঠামো।’

এটা কি কাজে লাগবে?

নিয়াজীর ব্যাখ্যা, ‘এ পরীক্ষার মধ্যে দিয়ে এক ফোঁটা তেলকে স্পর্শ না করেই তাতে পরিবর্তন আনা গিয়েছে- যা বায়োমেডিসিন এবং প্রিন্টিংএ ব্যবহার করা যায় এমন প্রযুক্তি তৈরিতে কাজে লাগানো যাবে।’

নিয়াজীর আশা, ভবিষ্যতে নামকরা কোন প্রতিষ্ঠানের হয়ে পদার্থ বিজ্ঞানের গবেষণা করবেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *